۲ آذر ۱۴۰۳ |۲۰ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 22, 2024
ইরান একটি শক্তিশালী দেশ
ইরান একটি শক্তিশালী দেশ

হাওজা / ইরানের সামরিক শক্তি অপ্রচলিত ও অপ্রথাসিদ্ধ রণকৌশল ও কৌশলগত স্থান সমূহে (অধিষ্ঠিত) প্রক্সি সমূহের মাধ্যমে জোরদার ( ও সমৃদ্ধ ) হয় ।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, Iran's military power is boosted by unconventional tactics and proxies in strategic locations

ইরানের সামরিক শক্তি অপ্রচলিত ও অপ্রথাসিদ্ধ রণকৌশল ও কৌশলগত স্থান সমূহে (অধিষ্ঠিত) প্রক্সি সমূহের মাধ্যমে জোরদার ( ও সমৃদ্ধ ) হয় ।

(Analysis by Brad Lendon, CNN Updated 3:42 AM EST, Thu January 09, 2020 ব্র্যাড লেন্ডেনের বিশ্লেষণ , সিএনএন , ৯-১-২০২০)

(CNN)Iran's military arsenal may be no match for the United States' in terms of technology, glitz and firepower, but Tehran makes up for it with tactics and numbers in strategic places, experts say.

সমর কৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন : প্রযুক্তি , জৌলুস ও চাকচিক্য এবং অগ্নিশক্তির ) আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা বারুদের শক্তি ও ক্ষমতা ) দিক থেকে ইরানের সামরিক অস্ত্র ভাণ্ডার আসলে কখনোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান ও সমকক্ষ হতে পারে না । কিন্তু তেহরান রণকৌশল এবং কৌশলগত জায়গা সমূহে (তার বসানো প্রক্সি সমূহের ) সংখ্যার মাধ্যমে তা ( সামরিক শক্তির এই অসমতা ) পূরণ করছে ও পুষিয়ে নিচ্ছে।

অনুবাদকের টীকা ১ : ইরানের বাৎসরিক সামরিক ও জাতীয় বাজেট যথাক্রমে ৮ বিলিয়ন ও ১১৯ বিলিয়ন ডলার এবং বাজেট ঘাটতি প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার । কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাৎসরিক সামরিক ও জাতীয় বাজেট যথাক্রমে ৭৬৬•৫৮ বিলিয়ন ও ৬ ট্রিলিয়ন ( ৬০০০বিলিয়ন ) ডলার এবং দেশটির বাজেট ঘাটতি ১•৮ ট্রিলিয়ন ( ১৮০০বিলিয়ন ) ডলার।

স্মর্তব্য যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান বিপ্লব ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বিপ্লবী পদক্ষেপ ও নীতি অবস্থানের কারণে ৪২ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধের শিকার যদিও সাম্প্রতিক দশকে পারমাণবিক বিষয়কে কেন্দ্র করে এ অবরোধ ( তাহরীম ) অত্যন্ত কঠোর ও তীব্রতর হয়েছে । যা হোক ,

ইরানের প্রায় ৯৬ বছরের সামরিক বাজেটের সমান হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বছরের সামরিক বাজেট এবং ইরানের ৫০ বছরের জাতীয় বাজেটের পরিমাণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বছরের জাতীয় বাজেট ! ইরানের ভৌগলিক আয়তন : প্রায় ৬৫০,০০০ বর্গ মাইল এবং জনসংখ্যা প্রায় ৮৫ মিলিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগলিক আয়তন : প্রায় ৩,৩০০,০০০ বর্গ মাইল এবং জনসংখ্যা : প্রায় ৩২০ মিলিয়ন । সুতরাং এ দুই দেশের মধ্যে কোনো দিক থেকেই তুলনা চলে না । এ ছাড়া মহাশক্তিধর ন্যাটো , এবং বিশ্বের অন্যান্য উন্নত ও শক্তিধর দেশ যেমন : কানাডা , অস্ট্রেলিয়া , নিউজিল্যান্ড , জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া , তাইওয়ান , মিসর , জর্দান , ইসরাঈল , সৌদি আরব সহ পারস্য উপসাগরীয় তেল সমৃদ্ধ দেশ সমূহও আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিত্র হিসেবে। সম্পদ , অর্থবল , লোকবল , বিজ্ঞান - প্রযুক্তি , শিল্প , সৈন্য সামন্ত , যুদ্ধাস্ত্র ইত্যাদি সব দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুনিয়ার ১ নং পরাশক্তি যা বিশ্বের বিরাট অংশের ওপর প্রভুত্ব ও আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে এবং ফির'আওন , হামান , শাদ্দাদ , নমরুদ , আবরাহা এবং অতীতের যে কোনো তাগুত ও যালিমের চেয়েও অধিক শক্তিশালী অর্থাৎ পবিত্র কুরআনের মতে শিরক ও কুফরের প্রতিভূ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা হচ্ছে ফিআতুন্ কাসীরাহ্ ( فِئَةٌ کَثِیْرَةٌ ) বা খোদাদ্রোহী তাগুতী বড় দল ও গোষ্ঠী । বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এবং হিযবুল্লাহ , হামাস , ফিলিস্তীনী প্রতিরোধ সংগ্রামী গ্রুপ সমূহ , ইয়েমেনের হুথি আন্দোলন ও আনসারুল্লাহ , ইরাকের আল - হাশদুশ শা'বী ও অন্যান্য প্রতিরোধ সংগ্রামী গ্রুপ , সিরিয়া , আফগানিস্তান ও বাহরাইনের প্রতিরোধ সংগ্রামীরা , ভেনেজুয়েলার মতো কিছু সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দেশ যারা ইরানের আদর্শিক সংগ্রামী মিত্র তারা পবিত্র কুরআনের ভাষায় ফি'আতুন্ ক্বলীলাহর ( فِئَةٌ قَلِیْلَةٌ ) বাস্তব নমূনা। সত্যপন্থীরা সব সময় ফিআতুন ক্বলীলা ( ক্ষুদ্র বা ছোট দল ও গোষ্ঠী ) এবং বাতিল পন্থীরা সবসময় ফিআতুন্ কাসীরাহ্ ( বড় দল বা বৃহৎ গোষ্ঠী ) এবং এদের মধ্যে দ্বন্দ্ব - সংঘাত ও সংগ্রামের কথা পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে । এরশাদ হচ্ছে : আল্লাহর হুকুমে ( অনুমতি ক্রমে ) কত ক্ষুদ্র দল কত

বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে ! আর আল্লাহ ধৈর্যশীল ( সাবির ) দের সাথে আছেন ( সূরা -ই বাক্বারাহ্ ২ : ২৪৯ ) ।

کَمْ مِّنْ فِئَةٍ قَلِيْلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً کَثِيْرَةً بِإِذْنِ اللّٰهِ ، وَ اللّٰهُ مَعَ الصَّابِرِيْنَ .

এছাড়াও সমসাময়িক কালে ফিআতুন্ কাসীরাহ , ফিআতুন্ ক্বলীলাহ কর্তৃক পরাভূত হওয়ার আরো বেশ কিছু ঘটনা ও উপমা বিদ্যমান রয়েছে । যেমন : লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলন দুবার ইসরাঈলকে ২০০০ সালে এবং ২০০৬ সালের ৩৩ দিনের যুদ্ধে , হামাস ও ফিলিস্তীনী প্রতিরোধ সংগ্রামীরা ইসরাইলকে ৫টি ইসরাঈল - গাযা যুদ্ধে পরাজিত করে । আর নি: সন্দেহে ইসরাঈল ফিআতুন্ কাসীরাহর ( বৃহৎ দল ) বাস্তব নমূনা বা মিসদাক এবং হিজবুল্লাহ , হামাস ও ফিলিস্তীনী প্রতিরোধ সংগ্রামীরা ফিআতুন্ ক্বলীলাহর বাস্তব উদাহরণ ( মিসদাক ) । আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সার্বিক সমর্থন পুষ্ট সৌদি নেতৃত্বাধীন ৩৩ জাতি জোট ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর বিরুদ্ধে ৭ বছর ধরে আগ্রাসন ও যুদ্ধ চালিয়ে জয়লাভ করতে পারে নি । আনসারুল্লাহ ফিআতুন ক্বলীলাহ হয়েও পূর্ণ ঈমান নিয়ে মহান আল্লাহর রাহে বীরত্বের সাথে আগ্রাসী যালিম ফিআতুন কাসীরাহ্ সৌদি - আমীরাতের নেতৃত্বাধীন ৩৩জাতি জোটের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও জিহাদ করে যাচ্ছে । আর নি: সন্দেহে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত এবং এই আগ্রাসী ৩৩ জাতি জোট ফিআতুন্ কাসীরাহর বাস্তব প্রতিভূ । আসলে মহান আল্লাহয় পূর্ণ ঈমান , তাক্বওয়া , তাওয়াক্কুল (ভরসা) নিয়ে সত্য , ন্যায়নীতি ও আদালতের ( ন্যায়পরয়ণতা ) উপর দৃঢ়পদ থেকে অর্থাৎ খাঁটি ইসলামী আদর্শ নিয়ে জিহাদ ও সংগ্রাম করলে মহান আল্লাহ মুজাহিদ দেরকে এ সংগ্রাম ও জিহাদের পরিণতি , প্রতিদান ও পুরস্কার ইহদাল্ হুসনায়াইন্ ( বিজয় ও শাহাদাত অর্থাৎ এ দুই মংগলের একটি ) দেবেনই । এটা হচ্ছে মহান আল্লাহর ওয়াদা ( প্রতিশ্রুতি ) । ইমাম খোমেইনীর ( রহ ) নেতৃত্বে ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয় হওয়ার পর থেকে ৪৩ বছর ধরে ইরানী জাতি ফিআতুন্ ক্বলীলাহ হয়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ফিআতুন কাসীরাহ্ অর্থাৎ বড় শয়তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী শয়তানী চক্রের বিরুদ্ধে অক্লান্ত সংগ্রাম করেই যাচ্ছে এবং মহান আল্লাহ পাক সংগ্রামরত ইরানকে যে বিজয়ী , সম্মানিত ও পুরস্কৃত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত পরাভূত ও লাঞ্ছিত করেছেন তা মার্কিন সংবাদ ও প্রচার মাধ্যম সি এন এনের এ প্রবন্ধ পড়ে বোঝা ও উপলব্ধি করা যায় এবং এ থেকে আবারো প্রমাণিত হয় পবিত্র কুরআনের এ শ্বাশত চিরন্তন বাণী : মহান আল্লাহর হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে এবং মহান আল্লাহ ধৈর্যশীল ( সাবির ) দের সাথে আছেন । আর এ বিজয়ের শর্ত হচ্ছে ধৈর্য্য অর্থাৎ ধৈর্যের সাথে ঈমানদার গণ আল্লাহর পথে জিহাদ ও সংগ্রাম করলে মহান আল্লাহ তাদেরকে বিজয় দেবেনই এমনকি তারা ক্ষুদ্র দল ( ফিআতুন ক্বলীলাহ ) হলেও ।

এ ছাড়াও যারা মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে তিনি তাদেরকে তাঁর পথসমূহের নির্দেশনা দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পবিত্র কুরআনে । এরশাদ হচ্ছে :

যারা আমাদের পথে সংগ্রাম করে আমরা তাদেরকে অবশ্যই আমাদের পথসমূহের নির্দেশনা দান করব এবং নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পূণ্যকর্মশীলদের সাথে আছেন ( অর্থাৎ তাদের সাথী ) । ( সূরা - ইং আনকাবূত্ ২৯ : ৬৪ )

وَ الَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا . وَ إِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِيْنَ .

মহান আল্লাহ পাক ইরানী জাতিকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে মহান আল্লাহর পথে সংগ্রাম করার কারণে তাদেরকে বিজয়ের বিভিন্ন পথ ও পদ্ধতি বাতলে দিয়েছেন যার ফলে আজ বড় শয়তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা অস্থির , ভীত , বিচলিত , উদ্বিগ্ন ও পর্যদুস্ত । আর এ বিষয়টা এ প্রবন্ধ পাঠ করে বেশ ভালো ভাবে উপলব্ধি করা যায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , পাশ্চাত্য ( ন্যাটো ) , ব্রিটেন কেন ইরানের আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী আদর্শিক প্রভাব এবং সমর শক্তি যেমন : ১.ক্ষেপনাস্ত্র , ২.নৌ শক্তি , ৩.আকাশ প্রতিরক্ষা এবং ৪. অপ্রচলিত অপ্রথাসিদ্ধ ( unconventional ) অথচ কার্যকর শক্তি ও প্রক্সি সমূহ নিয়ে যার পর নাই খুবই উদ্বিগ্ন , কিংকর্তব্যবিমূঢ় , হতভম্ব ও শংকিত । আর আপনারা সুপ্রিয় পাঠকমণ্ডলী এ সব বিষয় সম্পর্কে সিএনএনের এ প্রবন্ধ বিস্তারিত পড়ে মুজাহিদ ইসলামী বিপ্লবী ইরানের প্রতি মহান আল্লাহর অপার

অনুগ্রহ ( আলতাফ ) এবং এ সত্য কারামতটাও উপলব্ধি করতে পারবেন যে মহান আল্লাহ ইরানের মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারের বাৎসরিক সামরিক বাজেটকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলারের বাৎসরিক সামরিক বাজেটের সমান বা তার চেয়েও বেশি কার্যকর করে দিয়েছেন । এটাই হচ্ছে মহান আল্লাহর অশেষ বরকত , রহমত ও অপার করুণা । শুধু তাই নয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি বিশাল বাৎসরিক সামরিক বাজেট নিয়ে ন্যাটো জোট এবং ঠিক তেমনি বিশাল বাৎসরিক সামরিক বাজেট নিয়ে ইসরাইল ও অত্র অঞ্চলের প্রতিক্রিয়া শীল আরব রাষ্ট্রগুলোও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একত্রে কাজ করছে মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারের বাৎসরিক সামরিক বাজেটের অধিকারী ইরানের বিরুদ্ধে । কিন্তু এরা সবাই ইরানের সাথে কুলিয়ে ও পেরে উঠতে পারছে না ! এটা কি মহান ইমাম খোমেইনী ও ইসলামী বিপ্লবের কারামত নয় ?! সুধী পাঠক বর্গ ভাবুন চিন্তা করুন ।

অনুবাদ: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

تبصرہ ارسال

You are replying to: .